২৬/১১ -এর মুম্বই হামলার ঘটনায় মামলা করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। সেই হাই-প্রোফাইল মামলা লড়ার জন্য আইনজীবী নরেন্দর মানকে বিশেষ সরকারি আইনজীবী (স্পেশাল পাবলিক প্রসিকউটর) বা এসপিপি হিসাবে নিয়োগ করল অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। একদিকে, যখন মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর রানাকে ভারতে নিয়ে আসা হচ্ছে, সেই প্রেক্ষাপটে সামনে এল কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত।
এই বিষয়ে গতকাল (বুধবার - ৯ এপ্রিল, ২০২৫) একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে - সংশ্লিষ্ট মামলায় এনআইএ-র হয়ে আদালতে সওয়াল করবেন নরেন্দর মান। অর্থাৎ - তিনি মামলার প্রধান দুই অভিযুক্ত তাহাউর রানা ও ডেভিড কোলম্যান হেডলির বিরুদ্ধে সওয়াল করবেন। সেই মামলা চলবে দিল্লিতে অবস্থিত এনআইএ বিশেষ আদালতে।
আপাতত ৩ বছরের জন্য নরেন্দর মানকে এনআইএ-র আইনজীবী হিসাবে নিয়োগ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আবার এও জানানো হয়েছে - যত দিন এই মামলা চলবে, তিনি এই দায়িত্ব পালন করবেন। এক্ষেত্রে মামলা যদি ৩ বছরের আগেই শেষ হয়ে যায়, তাহলে মানের নিয়োগও সেইসঙ্গে শেষ হবে। অন্যথায় তাঁর বর্তমান নিয়োগের মেয়াদ থাকবে ৩ বছর পর্যন্ত।
২০০৮ সালের এনআইএ আইন অনুসারে নরেন্দর মানকে সংশ্লিষ্ট সংস্থার আইনজীবী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে একইসঙ্গে ২০২৩ সালের ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস) আইনও ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে, সূত্রের দাবি - আমেরিকা থেকে বিমানে তাহাউর রানা দিল্লিতে পৌঁছলেই খুব সম্ভবত তাকে তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। মুম্বই হামলা সংক্রান্ত মামলার শুনানি যত দিন চলবে, ততদিন তাকে তিহাড়েই থাকতে হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ৬৪ বছরের রানা আদতে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হলেও বর্তমানে তিনি কানাডার নাগরিক। তদন্তে উঠে এসেছে, এই রানার সঙ্গে হেডলির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এই হেডলি আবার দাউদ গিলানির নামেও পরিচিত। গোয়েন্দাদের দাবি, মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী হল এই হেডলি ওরফে গিলানি। যে নিজে একজন মার্কিন নাগরিক।
এখনও পর্যন্ত রানা সম্পর্কে যেটুকু তথ্য জানা গিয়েছে, তা হল - পাকিস্তানেই রানার জন্ম হয়। একটা সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে কাজ করত সে। পরবর্তীতে সেনার চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করে রানা। তার নিজের একটি অভিবাসন পরিষেবা সংক্রান্ত সংস্থা ছিল। সূত্রের দাবি, রানার সঙ্গে পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার দীর্ঘদিন ধরেই ভালো সম্পর্ক ছিল। আর, ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার নেপথ্যে ছিল এই লস্কর-ই-তৈবা।