যদি পরমাণু আলোচনা ব্যর্থ হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সংঘাত শুরু হয় তাহলে তারা ওই অঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাবে বলে হুঁশিয়ারি দিল ইরান। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ এ কথা বলেন। পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ষষ্ঠ দফা আলোচনার আগে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়ছে। এরই মধ্যেই ইরানি মন্ত্রী এহেন হুঁশিয়ারি দিলেন। যার জেরে এবার পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে আমেরিকাও। মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিজেদের দূতদের ফেরত ডাকছে আমেরিকা। এরই মাঝে আবার সোমবার ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগাচির সঙ্গে ওমানে দেখা করতে পারেন মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। (আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে 'অভূতপূর্ব অংশীদার' পাকিস্তান, দাবি US জেনারেলের)
আরও পড়ুন: মাস্ক ক্ষমা চাইতেই গলে গেলেন ট্রাম্প? ফোনে নাকি কথাও হয়েছে দু'জনের
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের পরমাণু সমঝোতা (জেসিপিওএ) পুনর্বিবেচনার লক্ষ্যে গত এপ্রিলে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু আলোচনা শুরু হয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর তিনি ইরানের ওপর 'চাপ' প্রয়োগের নীতি পুনর্বহাল করেন। যার মধ্যে সামরিক পদক্ষেপের হুমকির পাশাপাশি কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও রয়েছে। এই আবহে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাসিরজাদেহ বলেছেন, 'কিছু মার্কিন কর্মকর্তা হুমকি দিচ্ছেন যে, আলোচনা ব্যর্থ হলে সংঘাত শুরু হতে পারে। যদি আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়, তবে এই অঞ্চলে থাকা সব আমেরিকান ঘাঁটিই হবে আমাদের লক্ষ্য। আমরা বিনা দ্বিধায় তাদের ওপর হামলা চালাব।' তিনি আরও বলেন, ইরান সম্প্রতি দুই টন ওয়ারহেডসহ একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। তাঁর এই মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে ইরান তার সামরিক সক্ষমতা জোরদার করছে। (আরও পড়ুন: সেনা দিবসে আসিম মুনিরকে আমন্ত্রণ আমেরিকার, সফরের বিরোধিতা পাকিস্তানেই)
আরও পড়ুন: ইউনুসের প্রেস সচিব ভুলে গেছিলেন ওটা লন্ডন, ঢাকা না! ডাহা মিথ্যা বলে পড়লেন ধরা
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী? বুধবার এক পডকাস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, পরমাণু সমঝোতা নিয়ে তিনি আগের চেয়ে কম আশাবাদী। তাঁর কথায়, 'কয়েক মাস আগেও আমি যতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, এখন আর ততটা নেই। কিছু ঘটেছে, তবে আমি এখন চুক্তিটি সম্পর্কে কম আশাবাদী।' ট্রাম্প পুনর্ব্যক্ত করেন যে, প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প বলেন, তিনি আশা করছেন, বৃহস্পতিবার দুই দেশ আলোচনায় বসবে। অন্যদিকে তেহরান বলেছে রবিবার ওমানে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ইরান ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের আগের একটি প্রস্তাবে সাড়া দেবে, যা তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল। ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি কেবল বেসামরিক উদ্দেশ্যে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই সন্দেহ করে আসছে যে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চায়। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইরান ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত সীমার চেয়ে অনেক বেশি। এই স্তরটি পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধতার কাছাকাছি।