বিয়ের আসর, নাকি দক্ষযজ্ঞের স্থান? ঘটনাস্থল থেকে দুইয়ের মধ্য়ে ফারাক করাই কঠিন। বিয়েবাড়িতে নতুন সম্বন্ধী ও তাঁদের তরফ থেকে আসা নিমন্ত্রিতদের অসভ্যতায় ক্ষুব্ধ পাড়া পড়শিরাও। ঘটনা ঘিরে হুলুস্থূল ছড়িয়েছে বাংলাদেশের গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ঝাপড়হাটির হাজিপাড়া গ্রামে। অভিযোগ, বিয়ের রীতি মেটার পর খাবার পরিবেশন করা হতেই নানা অছিলায় গোটা বিয়েবাড়িতে ভাঙচুর চালান বরযাত্রীরা! শেষমেশ প্রতিবেশীরা রুখে দাঁড়ালে পালিয়ে যান তাঁরা!
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম এবং সোশাল মিডিয়ায় এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্য়েই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। অধিকাংশ মানুষই বরপক্ষের এহেন আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, বিয়ের আসর বসেছিল হাজিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দুখু মিঞার বাড়িতে। তাঁর মেয়ে সীমা, যে কিনা এখনও স্কুলে পড়ে, তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল একই উপজেলার বাসিন্দা আইনুল হকের ছেলে সবুজ সরকারের সঙ্গে।
কনে পক্ষের অভিযোগ, বিয়ের রীতি রেওয়াজ শুরু হওয়ার আগেই বর পক্ষ ঝামেলা শুরু দেয়। সেই ঝামেলা করেন মূলত বরের বাড়ির লোকজন। কারণ, তাঁদের দাবি ছিল - কনের বাড়ি থেকে নাকি প্রতিশ্রুতি মতো যথেষ্ট পণ দেওয়া হয়নি।
এ নিয়ে গন্ডগোল শুরু হলেও প্রাথমিকভাবে সেই ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়া হয়। তারপর নিয়ম অনুসারে, বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হয়। অভিযোগ হল, সেই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নববধূর গা থেকে সমস্ত সোনার গয়না খুলে নিয়ে সেখান থেকে চলে যান তাঁর সদ্য় হওয়া ননদ! তিনি কনেকে সোনার বদলে সিটি গোল্ডের গয়না পরিয়ে দেন! এবং কনের বাড়িতে খাবার খেতেও অস্বীকার করেন।
অভিযোগ, এরপর বরযাত্রীদের একাংশ বলেন খাবার খাবেন, অন্যরা বলেন - তাঁরা খাবার খাবেন না। শেষমেশ সকলকে রাজি করিয়ে খেতে বসানো হয়। কিন্তু, থালায় ভাত দেওয়া হতেই বরযাত্রীরা বলেন, এই ভাত ঠান্ডা ও নরম। তাই, খাওয়া যাবে না। তখন, কনের বাড়ি থেকে নতুন করে ভাত রান্না করার কথা বলা হলেও বরযাত্রীরা তা কানে তোলেননি বলে অভিযোগ।
আর, এরপরই শুরু হয় ভাঙচুর! চেয়ার-টেবিল উলটে, ভেঙে দিয়ে রীতিমতো তাণ্ডব শুরু করে দেন বরযাত্রীরা। শেষমেশ প্রতিবেশীরা বিয়েবাড়িতে এসে রুখে দাঁড়ান। বেগতিক বুঝে বরযাত্রীরা প্রায় সকলেই চম্পট দেন। কিন্তু, বর বাবাজি ও তাঁর কয়েকজন আত্মীয় ও বন্ধুকে আটকে রাখা হয়।
পরের দিন সকালে বরের পরিবার থেকে কয়েকজন বিয়েবাড়ি আসেন আটকদের ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে। এদিকে, ঘটনা গড়ায় স্থানীয় প্রশাসন পর্যন্ত। তাদের তরফে দুই পক্ষের মধ্য়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটমাট করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছে।