জর্জ সোরোসের ছেলে অ্যালেক্স বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে দেখা করলেন। উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছরে বহুবারই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরোস। এই জর্জ সোরোস একজন হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং সমাজসেবী। সোরোসের ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন বলে একটি সংস্থা আছে। তারা একাধিক দেশে ক্ষমতা বদলের ভূমিকাও নেয়। একাধিক রাজনৈতিক, লিগাল এনজিও, সিভিল রাইটস গ্রুপকে তারা নানা ভাবে সহায়তা করে বলেও খবর। আদানিকে নিয়ে একদা বিতর্কিত রিপোর্ট প্রকাশ করা ওসিসিআরপি সোরোসের সংস্থার টাকাতেই চলে বলে দাবি করেছিল আদানি গোষ্ঠী। বর্তমানে এই ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন হলেন জর্জ সোরোসের ছেলে অ্যালেক্স। (আরও পড়ুন: ভারতে ঢুকে বড় বড় গর্ত খুঁড়ছে বাংলাদেশিরা, দেখেই তাড়া গ্রামবাসীদের)
আরও পড়ুন: BSF-এর মহিলা জওয়ানের ওপর হামলার চেষ্টা, গুলি চলতেই ছুট বাংলাদেশিদের
এই নিয়ে বিগত কয়েক মাসের মধ্যে ইউনুস এবং অ্যালেক্স সোরোসের দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। এর আগে যখন ২০২৪ সালের অক্টোবরে ইউনুস নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন, তখন অ্যালেক্স সোরোসের সঙ্গে দখা হয়েছিল। সেই সফরকালেই বিল ক্লিন্টনের অনুষ্ঠানে মাহফুজ আলমকে 'বিপ্লবের মাথা' বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ইউনুস। তবে অক্টোবরের পর থেকে মার্কিন রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে সেই দেশের মসনদে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আবহে মার্কিন অর্থ সাহায্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এরই মাঝে অ্যালেক্স সোরোসের ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। (আরও পড়ুন: অসম্পূর্ণ থেকে গেল পুণ্যস্নানের সাধ, মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত শালবনির বৃদ্ধাও)
অ্যালেক্সের সঙ্গে ইউনুসের বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অফিসের তরফ থেকে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, 'ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের নেতৃত্ব বুধবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন এবং দেশের অর্থনীতিকে গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও পাচার হওয়া অর্থ ফেরানো, ভুয়ো খবর ছড়ানো রোখার উপায় বের করা নিয়েও কথা হয় দু'জনের। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয় তাঁদের।' (আরও পড়ুন: কীভাবে হেলিকপ্টারের সাথে ধাক্কা খেয়ে নদীতে ভেঙে পড়ল বিমান? ভাইরাল ATC অডিয়ো)
এদিকে মহম্মদ ইউনুস 'ট্রাম্প বিরোধী' হিসেবেই পরিচিত। মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে তিনি অস্বস্তিতে আছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মদম্মদ ইউনুসের সঙ্গে মার্কিন ডেমোক্র্যাটদের সুসম্পর্কের কথা অনেকেই জানেন। এর আগে ২০১৬ সালে ট্রাম্প জেতার পরে প্যারিসে এক অনুষ্ঠানে ইউনুস বলেছিলেন, 'ট্রাম্পের এই জয় সূর্য গ্রহণের মতো। কালো দিন আসছে। তা যেন আমাদের গ্রাস না করে, আত্মশক্তিকে দুর্বল না করে দেয়।' আর পরে যখন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিল, তখন নাকি ইউনুসের নাম না নিয়েই ট্রাম্প বলেছিলেন, 'ঢাকার মাইক্রোফাইন্যান্সের সেই ব্যক্তি কোথায়? শুনেছি, তিনি আমাকে হারাতে চাঁদা দিয়েছিলেন।' উল্লেখ্য, সেবার ট্রাম্প হারিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটনকে। আর ক্লিনটন পরিবারের সঙ্গে ইউনুসের ঘনিষ্ঠতা সর্বজনবিদিত। সম্প্রতি বাংলাদেশের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে মার্কিন সফরে গিয়েও বিল ক্লিনটনের ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ইউনুস। সেখানে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের 'মাথা'কে চিনিয়ে দিয়েছিলেন ইউনুস। এই সবের মাঝে বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি কি হয়, সেদিকে নজর সবার। আর এখন মার্কিন মুলুকে ট্রাম্প মসনদে বসায় ইউনুস সরকার তাদের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক 'সমর্থক' হারিয়েছে বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই পরিস্থিতিতে জর্জ সোরোসের ছেলের এই ঢাকা সফর ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।