একটি শিশু তার জীবনে কতদূর এগিয়ে যাবে এবং সে কী ধরণের মানুষ হবে, তা মূলত তার বাবা-মায়ের হাতে। ছোটবেলা থেকেই সে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে যে মূল্যবোধ এবং অভ্যাস শেখে, কোথাও না কোথাও, তা তার ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করে। তাই, ছোটবেলা থেকেই শিশুদের দৈনন্দিন রুটিনে কিছু ছোট অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যা জীবনের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। সাধারণত, বেশিরভাগ বাবা-মা কেবল বাচ্চাদের পড়াশোনা এবং কিছু মৌলিক বিষয়ের দিকে মনোযোগ দেন, যা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এর পাশাপাশি, শিশুর দৈনন্দিন রুটিনে এমন কিছু কার্যকলাপ অন্তর্ভুক্ত করাও গুরুত্বপূর্ণ, যা তাকে অনেক সামাজিক দক্ষতা এবং উন্নত জীবনযাপনের দিকে অনুপ্রাণিত করবে। তাছাড়া, এই অভ্যাসগুলি শিশুর ভবিষ্যতের উপরও গভীর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাহলে আসুন জেনে নিই কোন কোন কাজগুলো শিশুদের প্রতিদিন করা উচিত।
শিশুদের মধ্যে প্রতিদিন প্রার্থনা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন
ছোটবেলা থেকেই বাবা-মায়ের উচিত তাদের সন্তানদের প্রতিদিন প্রার্থনা করার অভ্যাস গড়ে তোলা। এর অনেক সুবিধা রয়েছে, প্রথমত, শিশুটি আপনার সংস্কৃতি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে এবং দ্বিতীয়ত, শিশুটি মানসিক সমর্থনও পায়। প্রতিদিন প্রার্থনা করলে শিশুর মনের ভয় ও উদ্বেগের মতো অনুভূতি কমে যায় এবং তারা মানসিকভাবে ভালো থাকে। এটি শিশুর মধ্যে কৃতজ্ঞতার অনুভূতিও বৃদ্ধি করে এবং এই ছোট্ট অভ্যাসটি তাদের সারা জীবন আবেগগতভাবে সাহায্য করে।
ঘরের কাজে বাচ্চাদের সাহায্য নিন
বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী, তাদের ছোট ছোট ঘরের কাজ দেওয়া উচিত। এটি শিশুদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি করে এবং তাদের স্বাবলম্বী করে তোলে। যদি শিশুটি ছোট হয়, তাহলে তাকে তার খেলনা গুছিয়ে নিতে বলুন অথবা তার বিছানা গোছানোর কাজ দিন। যদি শিশুটি বড় হয়, তাহলে ধীরে ধীরে তাকে বাসন ধোয়া বা খাবার রান্না করার কাজ দিন। আপনি বাচ্চাদের মুদিখানার জিনিসপত্র কেনার জন্যও পাঠাতে পারেন। সামগ্রিকভাবে, অবশ্যই বাচ্চাদের উপর কিছু দায়িত্ব অর্পণ করুন এবং তাদের নতুন মৌলিক দক্ষতা শেখাতে থাকুন।
শিশুদের মধ্যে পরিবারের সাথে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
আগের যুগে, পুরো পরিবার একসাথে বসে খাবার খেত। অনেক মজা আর হাসি-ঠাট্টা হতো, আর বাড়ির কারো যদি সমস্যা হতো, তাহলে সমাধানটা সেখানেই পাওয়া যেত। কিন্তু আজকাল, বেশিরভাগ পরিবারে, সবাই আলাদাভাবে বসে খায়, ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এর স্পষ্টতই পারিবারিক বন্ধনের উপর প্রভাব পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, বাবা-মায়ের উচিত তাদের সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই পরিবারের সাথে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করা। এটি কেবল আপনার সম্পর্ককেই শক্তিশালী করবে না বরং আপনার সন্তান তার সমস্যা এবং তার মনের কথাগুলিও আপনার সাথে ভাগ করে নেবে। এছাড়াও, শিশুর খাদ্যাভ্যাসেরও উন্নতি হবে।
বাচ্চাদের সাথে তাদের এবং আপনার দিন সম্পর্কে কথা বলুন।
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বাবা-মায়েদের অবশ্যই তাদের সন্তানদের সাথে কিছুক্ষণ বসতে হবে। এটিই সেরা সময় যখন আপনি আপনার সন্তানের সাথে আবেগগতভাবে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন এবং আপনার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে পারেন। এই সময়ে, অবশ্যই শিশুকে জিজ্ঞাসা করুন তার দিন কেমন গেল এবং তাকে বলুন আপনার দিন কেমন গেল। এর মাধ্যমে, শিশুটি আপনার সাথে খোলামেলাভাবে সবকিছু শেয়ার করবে এবং আপনার সম্পর্কে অনেক প্রশ্নও করবে। এটি নিশ্চিত করবে যে তোমাদের দুজনের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং মানসিক সংযোগ খুব শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এছাড়াও, শিশুর যোগাযোগ দক্ষতাও উন্নত হবে।
শিশুদের মধ্যে কৃতজ্ঞতার অনুভূতি জাগিয়ে তুলুন
ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রতি রাতে শিশুকে কৃতজ্ঞতা জার্নাল লিখতে বলুন। এটি খুব আনুষ্ঠানিকভাবে করার দরকার নেই। তুমি তাদের কেবল বলতে পারো যে তাদের জীবনের জন্য ঈশ্বর অথবা মহাবিশ্বকে ধন্যবাদ জানাতে। তুমি তাদের যে পাঁচটি জিনিসের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে চাও, তার একটি তালিকা তৈরি করতে বলতে পারো। সামগ্রিকভাবে লক্ষ্য হল শিশুর মধ্যে কৃতজ্ঞতার অনুভূতি জাগানো। এতে শিশুর মধ্যে জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে এবং সে মানসিকভাবেও সুখী এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। এই অভ্যাসটি কেবল এখনই নয়, সারা জীবন শিশুর জন্য খুবই কার্যকর হবে।
পাঠকদের প্রতি: প্রতিবেদনটি প্রাথমিক ভাবে অন্য ভাষায় প্রকাশিত। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির মাধ্যমে এটির বাংলা তরজমা করা হয়েছে। HT বাংলার তরফে চেষ্টা করা হয়েছে, বিষয়টির গুরুত্ব অনুযায়ী নির্ভুল ভাবে পরিবেশন করার। এর পরেও ভাষান্তরের ত্রুটি থাকলে, তা ক্ষমার্হ এবং পাঠকের মার্জনা প্রার্থনীয়।