নাম তাঁর পান্নালাল, যিনি কিনা এককালের ফুটবল খেলোয়াড়, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত, একা থাকেন মফঃস্বলের পুরনো বাড়িতে । তাঁর ছেলে পলাশ, শহরের এক কর্পোরেট কোম্পানিতে সেলস ম্যানেজার, রোজ চাকরি বাঁচিয়ে চলার জন্য লড়ছেন। জীবনের দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা এই দুই পুরুষ, আকস্মিক এক ঘটনার কারণে এসে পড়েন এক ছাদের তলায়। এমনই এক গল্প নিয়ে আসছে নন্দী মুভিজের প্রযোজনায় তৈরি পরিচালক পৃথা চক্রবর্তীর ছবি 'ফেরা'।
আর এই ছবির হাত ধরেই প্রথমবার বাংলা ছবিতে দেখা মিলবে অভিনেতা সঞ্জয় মিশ্রর। 'পান্নালাল'-এর চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। আর সঞ্জয়ের ছেলের চরিত্রে অভিনয় করবেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। আর এই ছবিতেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে সোহিনী সরকারকে। বাবা-ছেলের সমীকরণের মাঝেই দেখা মিলবে সোহিনীর চরিত্রটির।
নিজের চরিত্র প্রসঙ্গে সোহিনী সরকার বলেন, ‘ফেরা-য় আমার চরিত্রটি যদিও সংক্ষিপ্ত, তবে গল্পের প্রেক্ষিতে এর গভীর প্রভাব রয়েছে। অনেক সময় চরিত্রের দৈর্ঘ্যের চেয়ে প্রভাবটাই বড় হয়ে ওঠে। এই সিনেমাটির অংশ হতে পেরে আমি খুবই খুশি।'
ঋত্বিক চক্রবর্তীর কথায়, ‘ফেরা ছবির অংশ হতে পেরে আমি ভীষণ উৎসাহিত। পৃথা যেভাবে ভাবেন এবং তাঁর গল্পগুলোকে পর্দায় তুলে ধরেন — সেই সংবেদনশীলতা আর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গির আমি সবসময়ই প্রশংসা করেছি। কিংবদন্তি অভিনেতা সঞ্জয় মিশ্রর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করা আমার কাছে এক বিরাট সম্মানের বিষয়, আমি ভীষণভাবে মুখিয়ে আছি।’

ফেরা নিয়ে পরিচালক পৃথা চক্রবর্তী বলেন, ‘ফেরা এমন এক গল্প, যেটা বড় করে কিছু বলে না—বরং যেটা বলা হয় না, তাকেই জায়গা দেয়।এই ছবি আমার কাছে অনেকটা নিজের ভিতরে ফিরে তাকানোর চেষ্টা। আমার নিজের বড় হয়ে ওঠা যেহেতু মফঃস্বলের ছোট্ট শহরে, তাই এই ছবির প্রতিটা চরিত্রকেই আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি এবং খানিকটা বেঁচেছি। মফস্বল ছেড়ে বড় শহরের রোজনামচাতে বহুবার মনে হয়েছে আমরা কতটা ছুটছি, কেন ছুটছি, আর সেই দৌড়ের শেষে আদৌ কিছু বদলায় কি না—এই সব প্রশ্ন। এই ছবি মধ্যবিত্ততার, ক্লান্তির, আর সম্পর্কের সেই দিকগুলো নিয়ে কথা বলে, যেগুলো খুব সাধারণ, ও সত্যি। ফেরা কোনও চূড়ান্ত উত্তরে উত্তীর্ণ করে না। কিন্তু কিছুটা থেমে, কিছুটা বোঝার সুযোগ তৈরি করে।’
প্রযোজক প্রদীপ কুমার নন্দীর কথায়, ‘ফেরা আমাদের একটি বিশেষ প্রচেষ্টা । প্রথিতযশা অভিনেতা সঞ্জয় মিশ্র তাঁর প্রথম বাংলা ফিচার ফিল্মের যাত্রা শুরু করছেন আমাদের ব্যানারে, এবং এই ছবির পরিচালনায় রয়েছেন পৃথা চক্রবর্তী — এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বাংলার দুই গুণী শিল্পী ঋত্বিক চক্রবর্তী ও সোহিনী সরকার। আমাদের বিশ্বাস এই ছবি দর্শকদের হৃদয়ে গভীরভাবে প্রভাব ফেলবে এবং দীর্ঘদিন মনে থেকে যাবে।'