অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী টলিউডের অন্যতম সমাদৃত অভিনেতা। তাঁর অভিনয় দক্ষতা প্রশ্নাতীত। কিন্তু আচমকাই সোশ্যাল মিডিয়ার একটা বড় অংশের চোখে ‘ভিলেন’ অভিনেতা। সন্তান ছবিতে মিঠুনের কুলাঙ্গার পুত্র হিসাবে দর্শক দেখেছ তাঁকে। কিন্তু পর্দার ভিলেন থেকে যে বাস্তবেও দেব-ভক্তদের চোখে ভিলেন হয়ে উঠবেন ঋত্বিক, তা বোধহয় তিনি নিজেও ভাবেননি। আরও পড়ুন-‘এটা কোন বাংলা? শুধু গালাগালি?’ ঋত্বিক-দেব ভক্তদের কাজিয়া তুঙ্গে, সরব লগ্নজিতা
নেপথ্যে অভিনেতার সাম্প্রতিকতম সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট। সেখানে ঋত্বিক বিদ্রুপের সুরে লিখেছেন, সিনে-সমালোচকদের উদ্দেশ্যে (অন্তত তাঁর দাবি তেমনটাই) ‘শিরায় শিরায় রক্ত মাথায় কিন্তু গত্ত’। কিন্তু দেব-ভক্তরা সেই লাইনটা গায়ে মেখে নিয়েছে। সুদীর্ঘ বছর ধরে দেব ভক্তদের স্লোগান- ‘শিরায় শিরায় গরম রক্ত, আমরা দেবদার চরম ভক্ত।’ শিক্ষিত-মার্জিত অভিনেতার থেকে এমন কটূক্তি আশা করেনি, এমনটা লিখেছেন অনেকে। কেউ কেউ বলেছেন, হিংসায় জ্বলছেন ঋত্বিক। কারণ বক্স অফিসের লড়াইয়ে দেবের ছবি ১০ গোল দিচ্ছে ‘সন্তান’কে।
সন্তান মুক্তির শুরুতে দেব-শুভশ্রীর মুখোমুখি লড়াই নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, কারণ দুজনের একটা অতীত রয়েছে। তবে শেষপর্যন্ত যে ব্যাপারটা দেব-ভক্ত বনাম ঋত্বিক চক্রবর্তীতে এসে ঠেকবে তেমনটা কেউই বোধহয় আশা করেননি। এর আগে খাদানের প্রচার নিয়ে ‘কটাক্ষ' করেছিলেন রাজ চক্রবর্তী, পড়ে যদিও ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে তিনি বলেন, গোটাটাই নাকি ভুল বোঝাবুঝি। কিন্তু অন্য কোনও ছবিকে নিশানা করেননি। নিজের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে কী সাফাই ঋত্বিকের?
এই নিয়ে সকাল থেকেই ফোনে অধরা নায়ক, বিকালে এক সংবাদমাধ্যমের সামনে নীরবতা ভাঙলেন তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনকে রাজের ছবির ‘বাবু’ স্পষ্ট বলেন, ‘আমার পোস্টটায় অনেকে ‘খাদান’-এর নিন্দা, দেবের নিন্দা, আমার অসীম হিংসা— এই সব দেখতে পাচ্ছেন। তাতে একটু কল্পনাও রয়েছে। ভাল করে পড়লে দেখা যাবে, না জেনে সিনেমার ব্যবসা, কমার্স নিয়ে মন্তব্য করা নেটাগরিক বা কটাক্ষকারীদের ব্যঙ্গ করে এই পোস্ট করা হয়েছিল।’ কিন্তু সত্যি কি এতটাই সহজ ঋত্বিকের ওই পোস্ট?
ঋত্বিক তাঁর পোস্টে লিখেছিলেন, ‘চা দোকানের লোকটাকে এখনই বলতে শুনলাম, ‘সোশ্যাল ডিলেমায় দেখিয়েছিল, কিছু ছিঁচকে কিস্যু না বুঝে সিনেমা-বাণিজ্য-কমার্স নিয়ে নিজেদের গ্যাদগ্যাদে জ্ঞান বিলিয়ে দেবে অকাতরে। আর কত সহজেই প্রমাণ করবে, ‘শিরায় শিরায় রক্ত মাথায় কিন্তু গত্ত!’ আমিও ট্রেন্ড অনুযায়ী না বুঝেই শেয়ার করলাম কথাটা। এ দিকে চারটে ভিন্ন স্বাদের জমজমাট বাংলা ছবি চলছে। আপনার পছন্দ মতো হলে গিয়ে দেখুন।’
ঋত্বিকের পোস্টে কেউ লিখেছেন, ‘এত হিংসে কেন মনে? এই ভাবে বড় হওয়া যায় না’। কেউ বলেছেন, ‘নিজেদের মধ্যে এত দলাদলির জন্যেই আপনাদের ইন্ডাস্ট্রি র আজ এই অবস্থা’। তাদের পালটা জবাব দিলেও, বেশকিছু মন্তব্য পড়ে মুছেও ফেলেন ঋত্বিক। ঠিক যেমন, নিজের এই স্টেটাস বার পাঁচেক এডিট করেছেন তিনি। সেই নিয়েও সাফাই রয়েছে, ‘এডিট করে লেখা মানে ভুল শুধরে নিয়ে আরও সঠিক লেখার চেষ্টা ভাই। তোমার ওসবে বিশ্বাস নেই বুঝলাম’।
ঋত্বিকের ঠিক কোথায় আপত্তি? অভিনেতা জানান, ‘এক ধরনের মানুষ ‘বাকিগুলো নিপাত যাক’ বলে প্রচার চালাচ্ছে।' সেইশ্রেণির দর্শকদের নিয়েই তাঁর প্রতিবাদ। কারণ বাকি ছবির দলে তার ছবিও রয়েছে। ঋত্বিক বলেন, 'এদের দেখে মনে হচ্ছে, এরা জঙ্গি দর্শক! যারা সারা ক্ষণ ‘বনাম’-এ যাচ্ছে, অন্যের ছবি ধ্বংস হোক চাইছে।’