2 মিনিটে পড়ুন Updated: 25 Jan 2024, 12:32 PM ISTSubhasmita Kanji
Fighter Review: মুক্তি পেল সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত ফাইটার। কেমন হল হৃতিক দীপিকা জুটির প্রথম ছবি?
ফাইটার
ছবি: ফাইটার
পরিচালক: সিদ্ধার্থ আনন্দ
অভিনয়: হৃতিক রোশন, দীপিকা পাড়ুকোন, অনিল কাপুর
রেটিং: ৪.৬/৫
'POK এর মানে জানিস? পাকিস্তান ওকুপায়েড কাশ্মীর। মানে আমাদের জায়গা তোরা দখল করেছিস। আমরা অসভ্যতা করলে তোদের গোটা দেশ IOP হয়ে যাবে, মানে ইন্ডিয়া ওকুপায়েড পাকিস্তান। মাথায় রাখিস!' প্রজাতন্ত্র দিবসের ঠিক মুখে মুক্তি পাওয়া সিদ্ধার্থ আনন্দের ফাইটার দেশাত্মবোধের চেতনাকে আরও একবার এভাবেই উসকে দিল। কেমন হল হৃতিক দীপিকা জুটির প্রথম ছবি?
ফাইটার ছবির গল্প
ইন্টোলিজেন্সের থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী কাশ্মীরের এয়ার বেসে ফের হামলা করতে চলেছে সন্ত্রাবাদীরা। সেই জন্যই ভারতীয় এয়ার ফোর্সের সেরা স্কোয়াড্রন লিডারদের নিয়ে তৈরি হচ্ছে একটি দল। আর সেই দলেই আছে প্যাটি ওরফে শামসের পাঠানিয়া, মৃণাল রাঠোর ওরফে মিনি, তাজ, বাসির, সুখী, প্রমুখরা। আর এঁদের সিইও হলেন রকি। এঁদের মধ্যে রকি এবং প্যাটির মধ্যে ব্যক্তিগত সমস্যা আছে, রকি বিশেষ কারণে মোটেই সহ্য করতে পারে না প্যাটিকে। সে মনে করে প্যাটির গোঁয়ারতুমির জন্য তাঁদের দলের অন্যান্য লিডারদের প্রাণ ঝুঁকিতে পড়ে। বা প্রাণ হারাতে হয়। সেটা প্রমাণিতও হয় কয়েকবার। এমন অবস্থায় ফের পাকিস্তানের একটি হামলার কারণে বাসির এবং তাজ পাকিস্তানের হাতে বন্দি হয়ে, ঘটনাচক্রে এরপর প্যাটিকেও সেই দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কূটনীতিক আলোচনার পরেও বাসিরকে জীবন্ত অবস্থায় ফেরানো হয় না। এরপর কীভাবে তাজকে উদ্ধার করা হয়, কীভাবে গোটা ঘটনার মূলচক্রীকে হত্যা করা হয়, এই গোটা দলের বন্ধুত্ব, হৃতিক দীপিকার প্রেম সবটা উঠে আসে গল্পে।
সিদ্ধার্থ আনন্দ আগেই বুঝিয়ে দিয়েছেন অ্যাকশন এবং দেশাত্মবোধ তাঁর পছন্দের জ্যঁর। এবারও তার অন্যথা হল না। ভরপুর এরিয়াল অ্যাকশন এবং স্টান্ট নজর কাড়তে বাধ্য। সঙ্গে আছে দুর্ধর্ষ হিমালয়ের সৌন্দর্য। একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গল্পের বাঁধুনি এতটাই সুন্দর এবং মজবুত যে কোথাও এতটুকু ঝিমিয়ে পড়তে দেয়নি। কাটছাঁটের পরেও নাচ, গান, অ্যাকশন বন্ধুত্বে জমে গিয়েছে ফাইটার। হৃতিক যদি হটনেস এবং কামনেসের উদাহরণ হয় তাহলে দীপিকা নিঃসন্দেহে সৌন্দর্য এবং হটনেসের। তাঁদের জুটির প্রথম এই ছবি মাশাআল্লাহ ফাটাফাটি! অভিনয়ও দুর্দান্ত। অনিল কাপুর থেকে শুরু করে, হৃতিক দীপিকা তো বটেই অক্ষয় ওবেরয়, করণ সিং গ্রোভার, প্রমুখরা কেউ কম যাননি। এ বলে আমায় দেখে তো ও বলে আমায়, এমন অবস্থা। ক্যামেরার কাজ টেকনিক্যাল খুঁটিনাটি বেশ ভালো। একাধিক সিন তো আলাদা ভাবে নজর কেড়েছে। একটা দৃশ্যে সিআরপিএফ জওয়ানরা রাস্তা দিয়ে ট্রাকে যাচ্ছেন এবং পতাকা ওড়াচ্ছেন উত্তরে হেলিকপ্টারে বসে হৃতিক পতাকা ওড়াচ্ছেন আলাদাই দেখতে লেগেছে। বা এরিয়াল স্টান্টে দুটো ফাইটার জেট যখন একে অন্যকে আড়াআড়ি ভাবে ক্রস করছে সেটা মনে রাখার মতো। আরও একাধিক এমন দৃশ্য আছে।
ছবির শেষ ভাগে ইমোশনাল বিল্ড আপ খুব সুন্দর ভাবে হয়েছে। বাসিরের মৃত্যু এবং তার পর তাঁর সহকর্মীদের ইমোশন সবটা মিলিয়ে একটা দুর্দান্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এই সিন দর্শকদের চোখ ভেজাতে বাধ্য। তবে সব কিছুর মধ্যে রামন চিব এবং সিদ্ধার্থ আনন্দের মিলিত ভাবে লেখা এই ছবির স্ক্রিপ্ট সব থেকে ভালো। ডায়লগগুলো গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতোই। একটার উদাহরণ তো প্রথমেই দিলাম। আরেকটি হল, 'তিরঙ্গার থেকে সুন্দর কাফন আর কিছুই হয় না।' এছাড়া প্রতিটা গান বেশ সুন্দর। বিশেষ করে বন্দে মাতরম নিয়ে ট্রোল হলেও ছবিটির সঙ্গে গানটি একেবারে খাপেখাপ হয়েছে যেন।
ফলে এবারের প্রজাতন্ত্র দিবস বা তার ঠিক পরের উইকেন্ডে এই ছবি দেখে আসতেই পারেন। গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো, দেশকে নতুন করে যেন ভালোবাসতে শেখাবে এই ছবি।