এশিয়ার ধনকুবের মুকেশ আম্বানির পুত্র তিনি। আবার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক, তিনি অনন্ত আম্বানি। ৬ই এপ্রিল, রবিবার নিজের ৩০তম জন্মদিনের ঠিক আগে, গুজরাটের জামনগর থেকে দ্বারকাধীশ মন্দির পর্যন্ত ১৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ পদযাত্রা সম্পূর্ণ করেছেন অনন্ত আম্বানি। তিনি নিজের এই আধ্যাত্মিক যাত্রায় যাঁরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
গত ২৯ মার্চ, শনিবার, জামনগর থেকে পবিত্র দ্বারকাধীশ মন্দির পর্যন্ত ১৭০ কিলোমিটার পদযাত্রা শুরু করেন। তবে কোনও ঢাকঢোল পিটিয়ে নয়, এক্কেবারেই নিঃশব্দে এই যাত্রা শুরু করেছিলেন অনন্ত আম্বানি। ব্যক্তিগত আস্থা ও ধর্মীয় বিশ্বাস থেকেই এই যাত্রা শুরু করেন তিনি। জটিল শারীরিক সমস্যা আছে তাঁর, তবু নিজের বিশ্বাসে অটল ছিলেন অনন্ত। তাঁর এই পদযাত্রার সময় স্থানীয়রা অনেকেই তাঁর সঙ্গে হেঁটেছেন।
রবিবার সকালে দ্বারকাধীশ মন্দিরে অনন্ত আম্বানির সঙ্গে পদযাত্রায় যোগ দেন তাঁর স্ত্রী রাধিকা মার্চেন্ট এবং মা নীতা আম্বানি। রাধিকা মার্চেন্ট ও পদযাত্রায় অনন্ত আম্বানির সাথে যোগ দেওয়া মানুষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, গত বছর তাঁদের বিয়ের পর থেকেই এই পদযাত্রা করার ইচ্ছা ছিল অনন্তের এবং এখন তিনি অবশেষে তা শেষ করতে পেরেছেন।
রাধিকা ANI-কে বলেন, ‘আজ (৬ এপ্রিল) অনন্তের ৩০তম জন্মদিন। আমাদের বিয়ের পর এই পদযাত্রা করার ওর ইচ্ছা ছিল... । যদিও বহু আগে থেকেই ওর ইচ্ছা মনে মনে ছিল। আমরা গর্বিত যে আজ আমরা এখানে তার জন্মদিন উদযাপন করছি। আমি তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই যারা তার পদযাত্রার সফলতার জন্য আশীর্বাদ করেছেন…’।
অনন্তের মা, রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারপারসন নীতা আম্বানি ছেলের কৃতিত্বে গর্ব প্রকাশ করতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি ANI-কে বলেন, ‘একজন মা হিসেবে, আমার ছোট ছেলে অনন্তকে দ্বারকাধিশের এই ঐশ্বরিক স্থানের পদযাত্রা সম্পন্ন করতে দেখা খুবই গর্ব হচ্ছে। গত ১০ দিন ধরে, অনন্তের পদযাত্রায় যোগদানকারী সকল তরুণ আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং ধরে রেখেছেন। আমি কেবল দ্বারকাধিশের কাছে প্রার্থনা করি যেন তিনি অনন্তকে শক্তি দেন…। কারণ, ঈশ্বরের প্রতি ওর নিষ্ঠা, ভক্তি সংকল্প-ই ছিল সবকিছু।’
নিজের পদযাত্রা নিয়ে কী বলেন অনন্ত?
অনন্ত বলেন, ‘দেখুন, এটা আমার নিজস্ব আধ্যাত্মিক যাত্রা। ঈশ্বরের নাম নিয়ে আমি এটা শুরু করেছি এবং তার নাম ধরেই শেষ করব। আমি ভগবান দ্বারকাধীশকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি আমার আধ্যাত্মিক যাত্রায় যাঁরা আমার সঙ্গে ছিলেন তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমার স্ত্রী এবং মাও শীঘ্রই এখানে আসবেন।’ (গত রবিবার সংবাদ সংস্থা এএনআই অনন্ত আম্বানিকে উদ্ধৃত করে এ কথা বলেছিলেন।)
অনন্ত আম্বানি সেই সময়ের কথাও স্মরণ করেন যখন তিনি তাঁর বাবা মুকেশ আম্বানিকে তাঁর এই আধ্যাত্মিক পদযাত্রার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি জামনগর থেকে দ্বারকা পর্যন্ত তার পদযাত্রা চালিয়ে যাওয়ার জন্য, অনুপ্রেরণার জন্য বাবাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তাঁর কথায়, ‘যখন আমি আমার বাবাকে [মুকেশ আম্বানি] বলেছিলাম যে আমি পদযাত্রা করতে চাই, তিনি আমাকে সমর্থন করেন। আমি ওঁর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।’
২০২০ সালের মার্চ থেকে অনন্ত আম্বানি Jio Platforms Limited-এর পরিচালনা পর্ষদে, ২০২২ সালের মে থেকে Reliance Retail Ventures Limited-এর পরিচালনা পর্ষদে এবং ২০২১ সালের জুন থেকে Reliance New Energy Limited এবং Reliance New Solar Energy Limited-এর পরিচালনা পর্ষদে দায়িত্ব পালন করছেন। ২৯ বছর বয়সী অনন্ত আম্বানি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে Reliance Foundation-এর পরিচালনা পর্ষদেও দায়িত্ব পালন করছেন।