বাংলায় অব্যাহত সাধুসন্তদের নিয়ে বিতর্ক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটব্যাঙ্ক জোরাল করতেই সন্ন্যাসীদের আক্রমণ করছেন বলে রবিবার বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে এসে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর আজ, বুধবার পুরুলিয়ার বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় মাহাতোর নির্বাচনী প্রচারে এসে অমিত শাহ বললেন, ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ. স্বামী প্রণবানন্দ না থাকলে বাংলা বাংলাদেশ হয়ে যেত। ভোটে জিততে ত্যাগী, তপস্বী, সন্ন্যাসীদের আক্রমণ করা বন্ধ করুন। আপনি এমনিও জিতবেন না।’ ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের আগে এভাবেই তেতে উঠল রাজনীতির পারদ।
রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম, হিন্দু মিলন মন্দির বাংলার ভোটদানকে প্রভাবিত করছে। রাজনীতি করছেন কেউ কেউ। সবাই নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগের জবাবই আজ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তোপ, ‘স্বামী প্রণবানন্দ তথা ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ না থাকলে আজ বাংলা মিশে যেত বাংলাদেশে। আর মমতা দিদি ভোটে জেতার জন্য তাঁদেরই আক্রমণ করছেন। ভোটে জেতার জন্য ত্যাগী, তপস্বী, সন্ন্যাসীদের আক্রমণ বন্ধ করুন। আপনি এমনিও জিতবেন না। বাংলার মানুষ আপনাদের কড়া জবাব দেবে। যে কটি আসন পেতেন, সেটাও পাবেন না।’
আরও পড়ুন: বাতিল হয়ে গেল জেপি নড্ডার তিনটি জনসভা, লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে হতাশ কর্মীরা
বিতর্কের সূত্রপাত হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বক্তব্যকে ঘিরে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, কার্তিক মহারাজ তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেননি। আর এবার বাংলায় সভা করে ডেবরা এবং কাঁথি থেকে শাহের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, সেটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। ৫ দফার ভোটেই ৩১০ আসন দখল করে ফেলেছে বিজেপি। লড়াই শুধু ৪০০ আসন জেতার।’
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য নিজের বক্তব্যের পরিষ্কার ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, সাধু–সন্ন্যাসী সকলে নন, কয়েকজন বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। মঠ–মিশনকে হাতিয়ার করে রাজনীতি করবেন না। সাহস থাকলে ময়দানে নেমে রাজনীতি করুন। আর শাহ এদিন দুই সভাতেই দাবি করেন, ‘বাংলায় বিজেপি ৩০ আসন পেলে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের কয়লা পাচার, গরু পাচার, দুর্নীতি, চুরি, কাটমানি রাজ সব বন্ধ হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সন্ন্যাসী যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা তাঁকে হারানোর চেষ্টা করছেন। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, রামকৃষ্ণ মিশনকে দোষারোপ করছে।’