অশ্বিন, রোহিত ও কোহলির অবসর যেন স্মরণ করিয়ে দিল ৮০’র দশকের অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসকে। সেই সময়ে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট। সেই সময়ে চ্যাপেল, মার্শ ও লিলি প্রায় একসঙ্গে অবসর নিয়েছিলেন ঠিক যেমন অশ্বিন, রোহিত ও কোহলি অবসর নিয়েছেন।
৮০’র দশকের অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে ঠিক এমনটাই হয়েছিল (ছবি- এক্স)
অশ্বিন, রোহিত ও কোহলির অবসর যেন স্মরণ করিয়ে দিল ৮০’র দশকের অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসকে। সেই সময়ে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট। সেই সময়ে চ্যাপেল, মার্শ ও লিলি প্রায় একসঙ্গে অবসর নিয়েছিলেন ঠিক যেমন অশ্বিন, রোহিত ও কোহলি অবসর নিয়েছেন। তবে এরপরে দলের পুনর্গঠনের মধ্যে দিয় গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এখন সকলের চোখ টিম ইন্ডিয়ার দিকে রয়েছে।
ভারতীয় ক্রিকেট এখন যেন সেই ৮০’র দশকের অস্ট্রেলিয়ার পুনর্গঠনের ছায়া বহন করছে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি — এই তিনজনই তাদের শেষ টেস্ট খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ায় বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে। ১৯৮৩-৮৪ সালে, তিন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি — উইকেটকিপার রড মার্শ, ব্যাটিং তারকা গ্রেগ চ্যাপেল এবং গতির কিংবদন্তি ডেনিস লিলি — ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের সিডনি টেস্টেই নিজেদের টেস্ট কেরিয়ারের ইতি টানেন।
চ্যাপেল দ্বিতীয় দিনের পরই জানিয়ে দেন এটাই তার শেষ টেস্ট। লিলিও সেই রাতেই তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। মার্শ সিরিজ শেষ হওয়ার আগেই জানিয়ে দেন তিনি আর খেলবেন না।
এবার ২০২৪-২৫ মরশুমে ফিরে আসি। অশ্বিন অ্যাডিলেড টেস্ট খেলেন এবং এরপর তৃতীয় টেস্টে না খেলায় সিরিজ ছেড়ে ফিরে যান। কোহলির শেষ টেস্ট হয় সিডনিতে, যা সেই সিরিজেরও শেষ টেস্ট ছিল। আর রোহিত শর্মার শেষ টেস্ট হয়ে ওঠে এমসিজির বক্সিং ডে টেস্ট।
তাদের অবদান টেস্ট ক্রিকেটে অসামান্য হলেও, শেষ ক'টি ম্যাচে তারা কেউই ছন্দে ছিলেন না। বিদেশের মাটিতে অশ্বিন সবসময় দ্বিধার মধ্যে থাকতেন একমাত্র স্পিনার হিসেবে খেলবেন কি না। রোহিত ছিলেন একজন সুযোগ সন্ধানী টেস্ট ব্যাটার। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ৪৫ ইনিংসে করেছেন মাত্র একটি শতরান ও পাঁচটি অর্ধশতরান। বিরাট কোহলির ব্যাটে সেভাবে রান না এলেও নজর কেড়েছিলেন।
তবুও ভারত অবশ্যই এই তিন জনকে মিস করবে। নিয়মিত মানসম্পন্ন খেলোয়াড়দের পরিবর্তে নতুনদের এনে সেই স্থিতি ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখা খুব সহজ কাজ নয়। ঠিক যেমন মার্শ-চ্যাপেল-লিলি বিদায় নেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বে দীর্ঘ সময় পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল। ১৯৮৯ সালে অ্যাশেজ জয়ের আগে পর্যন্ত তারা একটিও বড় সিরিজ জিততে পারেনি।
তবে ভারতের পরিস্থিতি ততটা সংকটজনক নয়। বর্তমানের তরুণ ভারতীয় ক্রিকেটাররা আত্মবিশ্বাসে ভরপুর এবং প্রতিপক্ষদের ভয় পায় না। এটাই কোহলি ও রোহিতের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা মানসিকতারই প্রতিফলন।
চ্যাপেল-মার্শ-লিলি বিদায়ের শূন্যতা হয়তো ভারতের বর্তমান পরিস্থিতির চেয়ে অনেক বড় ছিল। তবে কেএল রাহুল, ঋষভ পন্ত, জসপ্রীত বুমরাহ ও শুভমন গিল — এদের মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন, যদিও ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্টের সিরিজটা কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে। প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকর ও কোচ গৌতম গম্ভীর-এর সামনে সবচেয়ে বড় কাজ হল দ্রুত একজন সঠিক টেস্ট অধিনায়ক নির্ধারণ করা।