বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আগুন ঝরালেন মিচেল স্টার্ক। লর্ডসে তৃতীয় সেশনে সাত ওভারের স্পেলের প্রায় প্রতিটি দলই যেন স্টার্কের হাত থেকে আগুনের গোলার আকারে বেরোচ্ছিল। ওই সাত ওভারের স্পেলে তিনটি মেডেন দেন স্টার্ক। খরচ করেন ১০ রান। নেন দু'উইকেট। যে সংখ্যাটা তিন বা তার আরও বেশি হতে পারত। আর তাঁর আগুনের বোলিংয়ের জেরে কেঁপে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইন-আপ। অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ২১২ রানে অল-আউট করে দেওয়ার পরে প্রথম দিনের শেষে ২২ ওভারে প্রোটিয়াদের স্কোর চার উইকেটে ৪৩ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বাকি দুটি উইকেট নেন প্যাট কামিন্স এবং জোশ হেজেলউড। অর্থাৎ ১৬৯ রানে পিছিয়ে আছেন প্রোটিয়ারা। ক্রিজে আছেন তেম্বা বাভুমা (৩৭ বলে তিন রান) এবং ডেভিড বেডিংহ্যাম (নয় বলে আট রান)।
খোয়াজার জীবনে নরকে পরিণত করেন প্রোটিয়ারা
অথচ বুধবার লর্ডসে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করতে নেমে শুরুটা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। যা সুযোগ আসছিল, যা ক্যাচ উঠছিল, তা কাজে লাগাতে ভুল করছিল না। আর সেটার শুরুটা উসমান খোয়াজাকে দিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার ওপেনারকে জীবনকে পুরো নরক বানিয়ে দেন প্রোটিয়া পেসাররা। শেষপর্যন্ত ২০ বলেই কোনও রান না করে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান খোয়াজা। তিন বল পরেই স্লিপে এডেন মার্করামের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হয়ে যান তিনে নামা ক্যামেরন গ্রিনও।
আরও পড়ুন: ‘রান-আউট’ থেকে ওয়াইড- শেষ বলে চরম নাটক, ১ উইকেটে জিতে ODI-তে ইতিহাস নেপালের
তারপর স্টিভ স্মিথ এবং মার্নাস ল্যাবুশান পার্টনারশিপ গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অজি ওপেনার। ৫৬ বলে ১৭ রান করে আউট হয়ে যান ল্যাবুশান। ট্র্যাভিস হেড এবং স্মিথের জুটিকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি প্রোটিয়া পেসাররা। গতবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হেড এবং স্মিথের জুটিতেই ভারত ক্রমশ পিছনে চলে গিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা সেই ভুলটা করেনি। দ্রুত হেডকে আউট করে দেয়।
প্রোটিয়ারা সেই অর্থে দিনের প্রথম ভুলটা করেন বিউ ওয়েবস্টারের ক্ষেত্রে। ৬৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পরে স্মিথ এবং বিউস্টার অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে টানতে থাকেন। তাঁদের দু'জনকেই সমস্যা পড়তে হয়। প্রোটিয়াদের ভাগ্য ভালো থাকলে দু'জনকেই আউট করে দিতে পারতেন। কিন্তু আম্পায়ার্স কলে তাঁরা বেঁচে যান। তারপরও বিউস্টারকে আউট করে দেন প্রোটিয়ারা। পরিষ্কার এলবিডব্লু ছিল। অথচ রিভিউ নেননি।
ভুলের পরে দিশেহারা হয়ে পড়েন প্রোটিয়ারা
আর সেই বিষয়টি জানতে পেরে কিছুটা যেন দিশেহারা হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রান খরচ করতে থাকে। আর সেই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে শুরু করেন স্মিথ এবং বিউস্টার। শেষপর্যন্ত নিজেই উইকেট দিয়ে আসেন স্মিথ। পেসারদের বোলিং এন্ড পালটানোর জন্য মার্করামকে বোলিংয়ে আনেন প্রোটিয়া ক্যাপ্টেন বাভুমা। তাঁর একটা মাঝারি মানের বলে ৬৬ রান করে আউট হয়ে যান অজি তারকা।
আরও পড়ুন: নামিবিয়া সফরের জন্য দলের অধিনায়ক হতে পারেন রিয়ান পরাগ- রিপোর্ট
২০ রানে শেষ ৫ উইকেট হারান অজিরা
কিছুক্ষণ পরেই আরও একটা ভুল করে বসেন অ্যালেক্স ক্যারি। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান। তারপর অজিদের ইনিংসে ধস নামে। পাঁচ উইকেটে ১৯২ রান থেকে ২১২ রানে অল-আউট হয়ে যান অজিরা। অর্থাৎ ২০ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারান। অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৭২ রান করেন ওয়েবস্টার। আর প্রোটিয়াদের হয়ে পাঁচ উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা। তিনটি উইকেট পান মার্কো জানসেন।