সোমবার রাতে আহমেদাবাদে আইপিএলের ম্যাচ ভেস্তে যায় বৃষ্টির জেরে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে গুজরাট টাইটান্সের ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ায় শ্রেয়স আইয়ারদের তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি। বরং লাভ হয়েছে বলা যায়, কারণ এক পয়েন্ট পাওয়ার সুবাদে তাঁরা কোয়ালিফায়ার ওয়ানে খেলার টিকিট নিশ্চিত করে ফেলেছে। অর্থাৎ প্রথম দুই দলের মধ্যে তাঁরা যে থাকবে লিগ টেবিলে, তা নিশ্চিত হয়ে গেছে। কারণ ১৩ ম্যাচ থেকে তাঁদের পয়েন্ট এখন ১৯। রাজস্থান রয়্যালস ছাড়া বাকি কোনও দলই তাঁদের টপকাতে পারবে না। সেদিক থেকে এই ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ায় বড় ক্ষতি হয়ে গেছে গত দুই বারের ফাইনালিস্ট গুজরাট টাইটান্সের।
২০২২ সালের চ্যাম্পিয়ন এবং ২০২৩ সালের রানার্স আপ গুজরাট টাইটান্সের কাছে গ্রুপ লিগের শেষ দুই ম্যাচ ছিল মাস্ট উইন। অর্থাৎ সহজ কথা বলতে গেলে, চার পয়েন্ট তাঁদের পেতেই হত দুই ম্যাচ থেকে। এরপর প্লে অফে যাওয়ার জন্য তাকিয়ে থাকতে হত বাকি দলগুলোর দিকে। কিন্তু এরই মধ্যে তাঁরা পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নেওয়ায় এবারের মতো আইপিএল থেকে তাঁদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। এই ফলাফল থেকে বরং সুবিধাই হয়েছে আইপিএলে প্লে অফের দৌড়ে থাকা বাকি চার দলের। দিল্লি ক্যাপিটালস দল অঙ্কের নিরিখে থাকলেও, তাঁদের সম্ভাবনা নেহাতই কম। তবে গুজরাটের বিদায় নিশ্চিত হওয়ায় লড়াই এখন সিমিত চার দল হায়দরাবাদ, চেন্নাই, লখনউ এবং বেঙ্গালুরুর মধ্যেই।
গুজরাট এতদিন প্লে অফের দৌড়ে থাকায় লড়াই ছিল পাঁচ দলের মধ্যে, কিন্তু সোমবারের পর সেই লড়াইয়ে থাকল চারটি দল। চেন্নাই সুপার কিংসের পয়েন্ট এই মূহূর্তে ১৪। আরসিবির বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জিতলে সরাসরি তাঁরা চলে যাবে প্লে অফে,কিন্তু হেরে গেলে চাপ বাড়বে রুতুরাজদের। কারণ লড়াইয়ে ঢুকে পড়বে আরসিবিও। এদিকে লখনউ দল যদি দুই ম্যাচে হারে সেক্ষেত্রে সুবিধা হবে সিএসকের, একটি ম্যাচে হারলেও নেট রান নেট ভালো থাকায় সুবিধা হবে ধোনিদেরই। অন্যদিকে সানরাইজার্স যদি পরের দুই ম্যাচে হারে এবং সিএসকেও যদি হেরে যায় সেক্ষেত্রে আরসিবি,সিএসকে এবং এসআরএইচের মধ্যে থেকে প্লে অফ নিশ্চিত হতে পারে নেট রান রেটের ভিত্তিতে। কিন্তু আরসিবি যদি বড় ব্যবধানে জিতে যায়, অন্যদিকে সানরাইজার্সও যদি একটি ম্যাচেও জেতে সেক্ষেত্রে চেন্নাইয়ের বিদায় হয়ে যাবে।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে প্রথম এবং একমাত্র পথই চেন্নাইকে হারানো, কারণ ১৩ ম্যাচে তাঁদের পয়েন্ট ১২। ফলে সিএসকের বিরুদ্ধে জয়ের পর তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে বাকি দলের দিকে। হায়দরাবাদ এবং লখনউ যদি দুটোর মধ্যে একটি করে ম্যাচে জেতে সেক্ষেত্রে নেট রান রেটে প্লে অফ নির্ধারিত হবে। এলএসজি এবং সানরাইজার্স যদি দুটো ম্যাচেই হেরে যায় সেক্ষেত্রে বড় সুবিধা পাবে আরসিবি। অন্যথায় তাঁদের বড় ব্যবধানে জিততে হবে সিএসকের বিরুদ্ধে। তবে হায়দরাবাদ এবং লখনউ পরের দুটি ম্যাচে জিতলে আরসিবির আর কিছুই করার থাকবে না।
আরও পড়ুন-IPL 2024-প্রথম ম্যাচে থেকে নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ধোনির কাছে যাইনি…বললেন রুতুরাজ, ভিডিয়ো
লখনউ সুপার জায়ান্টসকে পরের দুটি ম্যাচেই জিততে হবে তাও ভালো ব্যবধানে। ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট রয়েছে তাদের। মঙ্গলবার নিকোলাস পুরানদের খেলা রয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালসের সঙ্গে। যারা নেট রান রেটে লখনউয়ের থেকে এগিয়ে রয়েছে। পরের ম্যাচ শুক্রবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে। দুই অ্যাওয়ে ম্যাচে জিতলে তারা ১৬ পয়েন্টে পৌঁছাবে। সিএসকে যদি আরসিবিকে হারিয়ে দেয় এবং হায়দরাবাদ যদি একটি ম্যাচে জেতে সেক্ষেত্রে নেটরান রেট দেখা হবে, যেখানে এলএসজি পিছিয়ে রয়েছে। ফলে তাঁদের দুই ম্যাচেই বেশ বড় ব্যবধানে জিততে হবে। সিএসকে হেরে গেলে এবং লোকেশ রাহুলরা যদি পরের দুই ম্যাচে জেতে সেক্ষেত্রে তারা সরাসরি প্লে অফে চলে যাবে।
আরও পড়ুন-IPL 2024-অধিনায়ক হিসেবে বিরাটকে ফিরিয়ে আনা উচিত আরসিবির, বড় বার্তা প্রাক্তন তারকার
চেন্নাই, বেঙ্গালুরু এবং লখনউ সুপার জায়ান্টসের সঙ্গে প্লে অফের দৌড়ে রয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, তাঁদের ঝুলিতে রয়েছে ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট। তাঁরাই সব থেকে ভালো জায়গায় রয়েছে। পরের দুই ম্যাচ গুজরাট টাইটান্স এবং পঞ্জাব কিংসের বিপক্ষ। সরাসরি দুই ম্যাচ জিতলে তাঁরা প্লে অফে চলে যাবে। একটি ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতলেও নেট রান রেটের সৌজন্যে তাঁরা এগিয়ে থাকবে প্লে অফের দৌড়ে। তবে প্যাট কামিন্সের দল যদি দুই ম্যাচেই হারে সেক্ষেত্রে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে একটি ম্যাচে হারতেই হবে, অথবা চেন্নাই সুপার কিংসকে শেষ ম্যাচে হারতে হবে। এখন দেখার আইপিএলের লাস্ট ল্যাপে এসে প্লে অফ পাকা করতে পারে কোন কোন দল।