উপাচার্যের সমস্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কী করবেন? এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল রাজ্যপালকে। এই নিয়ে রাজ্যপাল আগেই জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সাংবিধানিক কলিগ। তাঁদের মধ্যে কী কথা হবে সেটা তিনি প্রকাশ্যে জানাবেন না। আজকের বৈঠকে সেই উপাচার্যের বিষয়ে আলোচনা হয় কি না, সেদিকেই নজর সকলের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সিভি আনন্দ বোস।
সংঘাত এবং প্রতিকূল আবহে মুখোমুখি বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন–নবান্নের মধ্যে একাধিক ইস্যুতে মতান্তর হয়েই রয়েছে। সেটা উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু করে বিল আটকে রাখা–সহ নানা বিষয় রয়েছে। এই আবহেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাবেলায় রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবিধানিক প্রধান এবং প্রশাসনিক প্রধানের বৈঠকে বহু বিষয় উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজভবন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
এদিকে প্রত্যেক বছরই মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ার সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে রাজভবনে যান। কিন্তু এবারের রাজ্যপাল–মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বুধবারই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শিলিগুড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি যান দার্জিলিং রাজভবনে। শনিবার তাঁর ফেরার কথা ছিল। সেখানে সফর কাটছাট করে আজ, শুক্রবার বিকেলেই তিনি ফিরে আসেন কলকাতায়। তারপরই সন্ধ্যেবেলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বৈঠকে বসতে চলেছেন বলে সূত্রের খবর। এই বৈঠকে তাঁদের মধ্যেকার অচলাবস্থা কাটবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যপালকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এই বৈঠকে অনেকগুলি বিষয়ে আলোচনা হবে। তাই মনে করা যাচ্ছে, যে সব বিষয় নিয়ে অচলাবস্থা রয়েছে সেটা দ্রুত কাটবে। তাছাড়া অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবন–নবান্নের মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। এমনকী তা নিয়ে মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। সেই মামলায় হেরেছেন রাজ্যপাল। সুপ্রিম কোর্ট তাদের পর্যবেক্ষণে জানিয়ে দেয়, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান এবং সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি। এখানে কোনও ইগো থাকা ঠিক নয়। রাজ্যপাল যেন কফির আমন্ত্রণ করে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। সেই আমন্ত্রণই গিয়েছে এবার।
এছাড়া উপাচার্যের সমস্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কী করবেন? এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল রাজ্যপালকে। এই নিয়ে রাজ্যপাল আগেই জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সাংবিধানিক কলিগ। তাঁদের মধ্যে কী কথা হবে সেটা তিনি প্রকাশ্যে জানাবেন না। আজকের বৈঠকে সেই উপাচার্যের বিষয়ে আলোচনা হয় কি না, সেদিকেই নজর সকলের। আবার কালীপুজোর আগে আগামী ৭–৮ নভেম্বর অধিবেশন হতে পারে বিধানসভায়। সেখানে মন্ত্রী–বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির বিল এবং জিএসটি সংক্রান্ত বিল নিয়ে অধিবেশনে আলোচনা হওয়ার কথা। তার প্রাক্কালেই এই সাক্ষাৎ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মুখ্যমন্ত্রী–রাজ্যপাল বৈঠকে হয়তো শান্তির পতাকা উড়বে। কিন্তু তা স্থায়ী হবে তো? উঠছে প্রশ্ন।