ডিজিটাল অ্যারেস্ট। প্রতারণার এক অন্য রূপ। নানা এজেন্সির নাম করে এই প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়। পুলিশ, সিবিআই, ইডি, এনআইএ সহ নানা এজেন্সির নাম করে মানুষকে বোকা বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এবার কলকাতার এক চিকিৎসক সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ভিডিয়োতে। কলকাতা পুলিশ সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেছে। সেই সঙ্গেই কলকাতা পুলিশ এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছে, 'ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট, একটি ডিজিটাল অ্যারেস্ট নামক সাইবার প্রতারণায় হারানো ১ কোটি টাকার মধ্যে থেকে ৩০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে প্রতারিত ব্যক্তির কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে।
একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিওতে, প্রতারিত ব্যক্তি তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন—কিভাবে প্রতারণাটি ঘটেছিল তা তুলে ধরেছেন এবং সাইবার সতর্কতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
এখন পর্যন্ত ৬ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।'
ভিডিয়োতে কী বললেন ওই চিকিৎসক?
ভিডিয়োতে ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, 'আমার নাম ডাঃ উৎপল বিট। আমি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ২০২৩ সালে অবসর নিয়েছিলাম। ২০২৪ সালে মুম্বই পুলিশের নাম করে ফোন করে বলা হয় আপনার নামে অনেক বেআইনি অ্যাকাউন্ট করা হয়েছে। সিবিআইতে কমপ্লেন করা হয়েছে। অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট আছে। চারিদিকে সাদা পোশাকের পুলিশ ঘিরে রয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। আপনি কাউকে কিছু জানাবেন না। আপনার সমস্ত টাকা ফ্রিজ করা হবে। এরপর খুব ভয় পেয়ে যাই। আমার সঞ্চিত টাকা প্রায় সবই তাদেরকে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠাই। এরপর কয়েকদিন পরে বুঝতে পারি সবটাই প্রতারণা হচ্ছে। এরপর কলকাতা পুলিশকে জানাই। কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক ফ্রড সেকশনের সহযোগিতায় ৩০ লাখ টাকা ফেরত পেলাম। তাদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমি কিছু কথা বলতে চাই,ডিজিটাল অ্যারেস্ট বলে কিছু হয় না। এব্যাপারে সচেতন থাকুন। আমার মতো আর কেউ যাতে না ঠকে।'
কলকাতা পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল প্রতারকরা। তবে তার মধ্যে ৩০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতারিত ব্যক্তির কাছে তা ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক। তবে আর যাতে কেউ এই ধরনের ফাঁদে না পা দেন সেব্যাপারে অনুরোধ করেছেন ওই অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক। মুম্বই পুলিশের নাম করে ফোন করে তাঁর সঙ্গে ভয়াবহ প্রতারণা করা হয়েছিল বলে খবর।