বেলেল্লাপনা আগেই শুরু হয়েছিল। তাই শহরের রাজপথ থেকে জরিমানা করতে হয় ৯ হাজার পথচারীকে। এই আবহ তৈরি হয়েছিল বড়দিনের প্রাক্কালে। আর বড়দিনে শহরে কী হল? শিয়ালদা থেকে এক ব্যক্তি মোটরবাইকে করে যাচ্ছিলেন ব্যারাকপুর। কিন্তু শ্যামবাজারে সেই মোটরবাইককে থামিয়ে দেন ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা। মোটরবাইকে ছিলেন একজন চালকই। তবে তাঁর মাথায় হেলমেট ছিল না। বড়দিনের রাতে হেলমেট নেই কেন? প্রশ্ন করেন এক ট্রাফিক পুলিশ। জবাবে ওই যুবক জানান, ব্যারাকপুর যেতে অনেকটা সময় লাগবে। এই দীর্ঘ সময় ধরে হেলমেট পরে থাকলে অস্বস্তি হয়। তাই তা তিনি পরেননি।
রাসবিহারী মোড় থেকে আর একটি মোটরবাইক পার্ক স্ট্রিটের দিকে যাচ্ছিল। সেই মোটরবাইকে চালকের মাথায় হেলমেট থাকলেও তাঁর গার্লফ্রেন্ডের মাথায় ছিল না। পুলিশ ওই দেখে মোটরবাইক থামায়। কেন মাথায় হেলমেট নেই? দুর্ঘটনা ঘটলে কী হবে? এমন প্রশ্ন তোলেন। জবাবে যুবতী বলেন, ‘হেলমেট পরলে চুল নষ্ট হয়ে যাবে।’ যা শুনে বেশ চমকে ওঠেন ট্রাফিক পুলিশ। কারণ ওই যুবতীর বক্তব্য ছিল, চুল স্ট্রেট করতে তিনি দেড় হাজার টাকা খরচ করেছেন। হেলমেট পরে তা নষ্ট করার ইচ্ছা নেই। আবার এক যুবককে হাতিবাগানে ধরা হয়েছিল। তিনি ট্রাফিক পুলিশকে জানান, হেলমেট পরার প্রয়োজন মনে করেননি। আর একজনের মন্তব্য, বড়দিনের মরশুমে খালি মাথায় শহরে ঘোরার মজাই আলাদা।
আরও পড়ুন: ‘একজন অসাধারণ জ্ঞানের মানুষ’, মনমোহন সিং সম্পর্কে বলেছিলেন বারাক ওবামা
বুধবার রাতে ট্রাফিক পুলিশদের এমন অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট মানুষ এখনও সচেতন হননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প করে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তারপর নবীন প্রজন্ম সচেতন হল কি? উঠছে প্রশ্ন। তাই মোটরবাইক চালকদের অনেকের এমন মনোভাবে রীতিমতো হতাশ কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ অফিসাররা। ট্রাফিক পুলিশ অফিসারদের বক্তব্য, ‘হেলমেট ছাড়া মোটরবাইকে চড়ে রাস্তায় দাপট দেখানো অত্যন্ত বিপজ্জনক। সেটা নিয়ে আমাদের পক্ষ থেকে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছেন। ফলে খেসারতও দিচ্ছেন দুর্ঘটনায় প্রাণ দিয়ে।’