'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত লাখ টাকায় বিক্রি হও?' - সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী তথা কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, অভিজিৎ যে মন্তব্য করেছেন, তা চূড়ান্ত অশালীন এবং অমাননাকর। ওই মন্তব্য করে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন তিনি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারা, ৫০৩ ধারা, ৫০৬ ধারা এবং ৫০৯ ধারায় মামলা রুজু করার দাবি তোলা হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে নতুন করে অভিজিৎ কোনও মন্তব্য করেননি।
অভিজিতের কোন মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে?
বুধবার হলদিয়ার চৈতন্যপুরের সভা থেকে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ শানান অভিজিৎ। তিনি দাবি করেন, সন্দেশখালির স্টিং অপারেশনের যে ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) প্রকাশ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভুয়ো। জালি ভিডিয়ো ছড়াচ্ছে তৃণমূল। সেই রেশ ধরেই মমতাকে আক্রমণ শানান অভিজিৎ।
তিনি বলেন, ‘আজ তৃণমূল বলছে যে সব মিথ্যে, ২,০০০ টাকায় রেখা পাত্রকে কেনা হয়ে গিয়েছিল। ২,০০০ টাকায় রেখা পাত্রকে কেনা হয়েছিল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তোমার হাতে তো আট লাখ গুঁজে দিলে একটা চাকরি দাও। তোমার হাতে ১০ লাখ গুঁজে দেয় এবং দিয়ে রেশন নিয়ে হাওয়া করে দেয় অন্য দেশে। ভারতবর্ষেই থাকে না সেই রেশন।’
সেখানেই থামেননি অভিজিৎ। তিনি বলেন, ‘তো তোমার দাম ১০ লাখ টাকা? কেন? তুমি কেয়া শেঠকে দিয়ে মুখে ফুলটিস কর, সেজন্য? মেকআপ কর। মেকআপ করে বেরোও? আর রেখা পাত্র গরিব মানুষ। লোকের বাড়িতে কাজ করে খাও। আমাদের প্রার্থী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সুন্দরী নন একটু বেশি সুন্দরী। সেজন্য রেখা পাত্রকে ২,০০০ টাকায় কেনা যায়? একজন মহিলা আর একজন মহিলার সম্বন্ধে এরকম উক্তি করতে পারেন, সেটা আমরা ভাবতেও পারি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা তো? আমার মনে প্রশ্ন জাগে মাঝে-মাঝে।’
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
অভিজিতের সেই মন্তব্যের পরই কমিশনে নালিশ জানিয়েছে তৃণমূল। তমলুকের বিজেপি প্রার্থীকে আক্রমণ শানিয়েছে শাসক দলের নেতারা। রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা অভিযোগ করেছেন, দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর নামে যে কথা বলেছেন অভিজিৎ, তা চূড়ান্ত অশালীন। ভদ্রতার সব সীমা অতিক্রম করে গিয়েছেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী। একজন প্রাক্তন বিচারপতির মুখের ভাষা কীভাবে এরকম হতে পারে, তা নিয়ে বিস্ময়প্রকাশ করেছেন শশী।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিতর্কের মধ্যেই অভিজিতের কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপি। পদ্মশিবিরের নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, যে কোনও রাজনৈতিক দলের কমিশনে যাওয়ার অধিকার আছে। বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করবেন অভিজিতই। উল্লেখ্য, বিজেপির অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, পদ্মশিবিরে যোগ দেওয়ার পরই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় অভিজিতকে সেন্সর করা হয়েছিল। ‘কম কথা’ বলার পরামর্শ দিয়েছিল শীর্ষ মহল।