Why Vishnu Take Varaha Avatar:শ্রীহরির বরাহ অবতার কীভাবে রক্ষা করেছিলেন পৃথিবীকে জেনে নিন সেই পৌরাণিক কাহিনি

যখনই পৃথিবীতে কোনও সংকট দেখা দেয়, ভগবান বিষ্ণু সময়ে সময়ে অনেক অবতার গ্রহণ করেন এবং সেই অবতারগুলির মাধ্যমে তিনি পৃথিবীর উপর আগত গুরুতর সংকটের অবসান ঘটান। প্রতিটি অবতারের একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছিল। যখন হিরণ্যক্ষ রাক্ষস পৃথিবীকে অপহরণ করে অতল গহ্বরে লুকিয়ে রেখেছিল, তখন ভগবান বিষ্ণু পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য বরাহ রূপে তাঁর তৃতীয় অবতার গ্রহণ করেছিলেন। হিরণ্যক্ষ এবং হিরণ্যকশিপু ছিলেন দুজন খুব বড় রাক্ষস, উভয় ভাইই ছিলেন মা দিতি এবং মহর্ষি কশ্যপের পুত্র। দুজনেই খুব শক্তিশালী ছিলেন এবং দুজনেই বিশ্ব জয় করতে এবং অজেয় যোদ্ধা হতে চেয়েছিলেন। এই অহংকারে, তাঁরা নিজেদেরকে জগতের রক্ষক ভগবান বিষ্ণুর চেয়েও বেশি শক্তিশালী এবং শ্রেষ্ঠ ভাবতে শুরু করে।একবার, নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সেরা প্রমাণ করার জন্য, হিরণ্যক্ষ নামে রাক্ষস সমগ্র পৃথিবীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পৃথিবীকে পাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং সেখানে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। পৃথিবী অপহরণের পর, সর্বত্র বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, মানুষের জীবন বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে এবং দেবতারা চিন্তিত হতে শুরু করেন।যখন হিরণ্যক্ষ পৃথিবীকে নিয়ে গিয়ে অতল গহ্বরে লুকিয়ে রেখেছিলেন, তখন ভগবান বিষ্ণু ব্রহ্মার নাক থেকে আট ইঞ্চি লম্বা বরাহ রূপে আবির্ভূত হন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি একটি বিশাল পাহাড়ের আকার ধারণ করেন। ভগবান বিষ্ণুর এই রূপ দেখে সকল দেবতা ও ঋষিরা তাঁকে পুজো করলেন এবং তাঁর উপর ফুল বর্ষণ করলেন। ভগবান বরাহ তাঁর নাকের সাহায্যে পৃথিবীকে খুঁজে বের করেছিলেন।যখন ভগবান বিষ্ণু বরাহ অবতারে পৃথিবী দখল করার জন্য পাতালে পৌঁছালেন, তখন তাঁর এবং হিরণ্যক্ষের মধ্যে এক ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হল। সেই যুদ্ধের পর, ঈশ্বর বিজয়ী হন এবং পৃথিবীকে তার দাঁতের উপর রেখে বের করে আনেন।এরপর, ভগবান বরাহ তাঁর খুর দিয়ে চেপে জল বন্ধ করে তার উপর পৃথিবী স্থাপন করেন এবং মার্গশীর্ষ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীতে উপবাস করেন ও সেই জল পান করেন। তার পরে দ্বাদশীতে তিনি একই জলে তাঁর দেহ ত্যাগ করেন। । সেই জলের নাম ছিল আদি গঙ্গা এবং সেই স্থানের নাম ছিল শুকর ক্ষেত্র, যা বর্তমানে উত্তর প্রদেশের কাসগঞ্জ জেলায় অবস্থিত সোরন শুকর ক্ষেত্র নামে পরিচিত। বরাহ অবতার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য বরাহ পুরাণ, ভাগবত গীতা, বিষ্ণু পুরাণে দেওয়া আছে। এটি ছিল ভগবান বিষ্ণুর তৃতীয় অবতার কিন্তু মানুষের কল্যাণের জন্য প্রথম অবতার, যেখানে তিনি পৃথিবী এবং পৃথিবীতে অবস্থানরত বাসিন্দাদের রক্ষা করেছিলেন।