মহাশিবরাত্রির উৎসব প্রতিটি শিব ভক্তের জন্য বিশেষ এবং আজ এই শুভ উপলক্ষে, ভক্তরা মহাদেবের মন্দিরে গিয়ে অবিরাম পুজো করছেন। ভক্তরা ভগবান শিবের অভিষেক করছেন। এখানে আমরা একটি অনন্য শিব মন্দির সম্পর্কে জানব। প্রতি বছর কর্ণাটকের একটি শিব মন্দিরে হাজার হাজার শিবভক্ত এবং তীর্থযাত্রীর বিশাল সমাগম হয়। চিকমাগালুর জেলার শৃঙ্গেরিতে অবস্থিত বিদ্যাশঙ্কর মন্দির সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য, যা জানলে আপনি অবাক হবেন।বিদ্যাশঙ্কর মন্দিরটি ১৩৩৮ খ্রিস্টাব্দে ঋষি বিদ্যারণ্য কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। ঋষি বিদ্যারণ্য বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। প্রতি বছর মহাশিবরাত্রিতে, বিদ্যাশঙ্কর মন্দিরের স্তম্ভের উপর সূর্যের রশ্মি পড়ে, মানুষ এটিকে কামনার দরজা বলে মনে করে এবং সেই স্তম্ভের পুজো করে। মন্দিরের স্থাপত্য অসাধারণ, এটি দ্রাবিড় স্থাপত্য অনুসারে একটি অর্ধবৃত্তাকার আকৃতিতে নির্মিত যা তার অনন্য জ্যোতির্বিদ্যা এবং জ্যোতিষশাস্ত্রীয় তাৎপর্যের জন্য বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত।এই মন্দিরে প্রবেশ এবং প্রস্থানের জন্য ৬টি দরজা রয়েছে, পশ্চিম এবং পূর্ব দিকে দুটি মণ্ডপ রয়েছে। গর্ভগৃহটি পশ্চিম মণ্ডপে অবস্থিত এবং পূর্ব মণ্ডপে ১২টি স্তম্ভ রয়েছে যা ১২টি রাশিচক্রের প্রতিনিধিত্ব করে। এগুলোর উপরে, সূর্যের রশ্মি ছাদের একটি ছোট জানালা দিয়ে একের পর এক ১২টি স্তম্ভের উপর পড়ে, যা ১২ মাসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এর অর্থ হল সূর্যের রশ্মি এক মাসের সমান সময় ধরে একটি স্তম্ভের উপর পড়ে। মন্দিরের নির্মাতারা এটি এমনভাবে তৈরি করেছিলেন যে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট রাশির সঙ্গে সম্পর্কিত স্তম্ভের উপর সূর্যের আলো পড়ে। ঠিক যেন একটা ক্যালেন্ডার।মন্দিরটির আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, বছরের মাত্র দু দিনই রশ্মি সরাসরি গর্ভগৃহে প্রবেশ করে, মাত্র দু দিনই রশ্মি শিবলিঙ্গের উপর পড়ে, যখন বছরের দুই দিন দিন এবং রাত্রি সমান থাকে তখন এটি ঘটে। মহা শিবরাত্রিতে, হাজার হাজার মানুষ শৃঙ্গেরিতে শিবলিঙ্গের পুজো করতে আসেন। প্রতি বছরের মতো এ বছরও হাজার হাজার ভক্ত এখানে এসেছেন। মহাশিবরাত্রিতে, এখানে চতুর্য্যম পুজো সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিটে শুরু হয় এবং পরের দিন সকাল পর্যন্ত চলতে থাকে।এই অনন্য শিব মন্দির বিশেষ ভাবে জাগ্রত, যার অমোঘ টানে প্রতি বছর শিবরাত্রি ও অন্যান্য বিশেষ তিথিতে বিপুল ভক্তের সমাগম হয় এখানে।